আসলে মূলত কম বেশি আমরা সকলেই জানি প্রত্যেক মুসলমানের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। তাছাড়া দৈনন্দিন ফরজ নামাজের পাশাপাশি অনেকগুলো নামাজ রয়েছে যেমন ওয়াজিব, সুন্নত, নফল ইত্যাদি।
প্রত্যেক মুসলমানের জানা উচিত এশার নামাজ সর্বমোট কয় রাকাত কিংবা দৈনন্দিন মোট কত রাকাত নামাজ আমাদেরকে পড়তে হবে। তবে প্রথম দিকে অনেকেই এই বিষয়টা জানে না যেমন আমরাও আগে এই বিষয়টা জানতাম না।
যার কারণে এমন অনেক মুসলমান আছেন যারা কিনা এশার নামাজ সর্বমোট কয় রাকাত এটা লিখে গুগলের মধ্যে সার্চ করে থাকে।
ঠিক তারই ভিত্তিতে এখন আমি আপনাদের সামনে সেই বিষয়টা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করবে যেন আপনারা এই বিষয়টা জেনে যান। তবে একটা কথা বলের একাই ভালো যে এখানে যেহেতু শুধুমাত্র এশার নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে তাই এখানে এশার নামাজ মোট কত রাকাত এই বিষয়টা তুলে ধরা হবে। তাহলে চলুন সেই বিষয়টা একটু জেনে নেয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম | সালাতুত তসবিহ নামাজের দোয়া ও ফজিলত
এশার নামাজ কয় রাকাত
- ফরজ নামাজের আগে ৪ রাকাত সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদা।
- এর পর ৪ রাকাত ফরজে আইন।
- দুই রাকাত সুন্নাত।
- দুই রাকাত নফল।
- ও তিন রাকাত বিতির নামাজ।
এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
আমরা যেহেতু এর আগে জেনে গেছি মোট কত রাকাত নামাজ পড়তে হয় এশার এর সময়, এখন আমরা আপনাদের সাথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেয়ার করব সেটা হচ্ছে এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম কি রকম এই বিষয়টা নিয়ে। আপনাদের সুবিধার্থে আমি নিজেই প্রত্যেকটি বিষয় খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছি সুতরাং সেখান থেকে দেখে নিন।
- আমরা এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার জন্য প্রথমে অযু করে পাক পবিত্র হবো
- তারপর কিবলামুখি হয়ে জায়নামাজে দাড়াবো।
- চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত করবো! যেমনঃ নাওয়াইতুআন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবা’য়া রাকাআতাই সালাতিন ইশাই ফারদুল্লাহি তা’য়ালা মুতাওয়াজ জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর..!! (বিঃদ্রঃ ইমামের পিছনে পড়লে ‘ফারদুল্লাহি তায়ালা’ বলার পর ইকতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম পড়বেন) বাংলা অর্থঃ এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে আমি ক্বিবলামুখি হয়ে নিয়ত করলাম ‘আল্লাহু আকবর’
- এরপর (তাক্ববিরে তাহরিমা) আল্লাহু আকবর বলে দুই হাত কাঁদ বরাবর উঠিয়ে বুকে হাত বাঁধবো।
- এরপর সানা পাঠ করতে হবে। সানাঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবারাকাসমুকা ওয়াতা আলা জাদ্দুকা ওয়া-লা ইলাহা গাইরিকা’
- সানা পাঠের পর সুরা ফাতিহার সাথে যেকোন একটি সুরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
- এরপর আল্লাহু আকবর বলে রুকুতে যেতে হব।
- রুকুতে গিয়ে ‘সুবহানা রাব্বিয়ালআযিম’ তিনবার/পাঁচবার/সাতবার পড়তে হবে।
- সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে রুকু থেকে উঠে রাব্বানা লাকাল হামদ পড়তে হবে।
- এরপর আল্লাহু আকবর বলে সিজদায় যেতে হবে।
- সিজদায় সুবহানা রাব্বিআল আলা তিনবার/পাঁচবার/সাতবার পড়তে হবে।
- সিজদাহ থেকে উঠে বসার পরে اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ পড়ার পর পুনরায় সিজদায় গিয়ে একইভাবে তাসবিহ পাঠ করতে হবে।
- প্রথম রাকাত শেষ হলো এবং একই নিয়মে দ্বিতীয় রাকাত শেষ করতে হবে।
- দ্বিতীয় রাকাতের শেষে সিজদাহ্ থেকে উঠে বসে তাশাহহুদ পড়তে হবে। তাশাহহুদঃ আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহী ওয়াসসালা ওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাতি আসসালামু আলাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ, আসসালামু আলাইনা আলা ইবাদিল্লাহিস সুয়ালিহিন,আসহাদুআন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আসহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
- বিঃদ্রঃ ‘আশহাদু আন লা ইলাহা’ বলার সময় ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল উত্তলন করবে..!!
- এরপর আল্লাহু আকবর বলে উঠে বাকি দুরাকাত শেষ করবে বাকি দুরাকাতে আলহামু শরিফের সাথে সুরা মিলাবেনা।
- মোট চার রাকাত শেষ করে শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ ও দরুদ শরিফ পাঠ করবে। দরুদ শরিফঃ আল্লাহুম্মা সাল্লিয়ালা মুহাম্মাদ ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহীম ওয়ালা আলি ইবরাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ! আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহীম ওয়ালা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ!
- এরপর দুয়ায়ে মাছুরা পড়তে হবেঃ দুয়া মাছুরাঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাসিরান ওয়ালা ইগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফীরলি মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম।
- এরপর দু কাঁদে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।
- এভাবে এশার চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হয়।
রাত ১২টার পর কি এশার নামাজ পড়া যাবে
আমাদের মধ্যে আবার অনেকে আছেন যারা কিনা প্রতিনিয়ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন ঠিক আছে, কিন্তু মাঝেমধ্যে এশার নামাজ পড়ার মধ্যে দেরি হয়ে যায়। বিশেষ করে যারা কিনা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকে তারাই এশার নামাজ কিংবা অন্যান্য নামাজ পড়তে দেরি করে ফেলে।
যদি বা প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সমস্ত কাজ পেলে আগে আল্লাহর বিধান পালন করা অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত দৈনিক নামাজ আদায় করা। যেহেতু নামাজ পড়া আল্লাহ তায়ালার দেওয়া একটি বিধান আমাদের জন্য ফরজ তাই সমস্ত কাজ পেলে আমাদেরকে আগেই নামাজ পড়তে হবে।
তো অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন কারনে আমাদের এশার নামাজ পড়তে দেরি হয়ে যায় যার কারণে অনেকেই google এর মধ্যে সার্চ করে থাকে রাত ১২টার পর কি এশার নামাজ পড়া যাবে। সুতরাং আপনারা যেহেতু এই প্রশ্ন করে থাকেন তাহলে আপনাদের প্রশ্নের উত্তরটা আমি নিচে তুলে ধরেছি। সুতরাং এখান থেকে উত্তরটা জেনে নিন:-
হ্যাঁ রাত ১২ টার পরে এশার নামাজ আদায় করা যাবে, কেননা এশার ওয়াক্ত ফজরের নামাজ পর্যন্ত দীর্ঘায়ীত থাকে তবে অর্ধরাত্রি পরে পড়া অনুত্তম।
এশার নামাজের শেষ সময় | এশার নামাজের ওয়াক্ত কতক্ষণ থাকে
এশার নামাজ এর মূল সময় হলো মধ্যরাত পর্যন্ত,মধ্যেরাতের পরে এশার নামাজ পড়া মাকরূহ। কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি বিশেষ কারণে এশার নামাজ না পড়ে থাকেন, তাহলে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তিনি এশার নামাজ পড়তে পারবেন।তা সালাত আদায় হয়ে যাবে মাকরুহের সঙ্গে।
তারাবির নামাজের ফজিলত
তারাবির নামাজ পবিত্র রমজান এর অন্যতম ফজিলতপূর্ণ আমল! এশার নামাজ আদা করার পর তারাবীর নামাজ আদায় করা সুন্নত!
রমজান মাসে প্রত্যেকটি নফল ইবাদতের সাওয়াব ফরজের সমান দেওয়া হয়। আর একটি ফরজের সওয়াব সত্তরটি ফরজের সমপরিমাণ বলে গণ্য হয় , সুতরাং এটি একটি রমজান মাসের অনন্য বৈশিষ্ট্য।
রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি রমজানে একটি নফল আমল করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি নফল আদায় করল।
আরো পড়ুনঃ জুমার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম | জুমার নামাজ মোট কত রাকাত
এশার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
এশার নামাজ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের অন্যতম। পশ্চিম আকাশের দিগন্ত লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পর থেকে সুবহে সাদিক উদয় হওয়া পর্যন্ত এশার নামাজের সময়। তবে মধ্যরাতের পরে এ নামাজ আদায় করা মাকরুহ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও হাদিস শরিফে এশার নামাজের বিশেষ কয়েকটি ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। নিচে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
নিফাক-মুক্তির সনদ: রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কষ্টকর নামাজ হলো এশা ও ফজরের নামাজ। এ দুই নামাজের কী ফজিলত, তা যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুই নামাজে অংশ নিত।’ (মুসলিম) আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.) বলেন, ‘আমরা ফজর ও এশার নামাজে কাউকে অনুপস্থিত দেখলে তাঁর ব্যাপারে আমাদের মনে মুনাফিক হওয়ার সংশয় সৃষ্টি হতো।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়িদ)
ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘এশা ও ফজরের নামাজে পরিচিত মুনাফিক ও অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কাউকে অনুপস্থিত দেখা যেত না।’ (মুসলিম)
অর্ধরাত ইবাদতের সওয়াব: রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতসহকারে পড়ল, সে যেন অর্ধরাত পর্যন্ত ইবাদত করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতসহকারে আদায় করল, সে যেন সারা রাত জেগে থেকে ইবাদত করল।’ (মুসলিম)
সারা দিনের ক্লান্তি, পরিবারের লোকদের সঙ্গে আড্ডা, ঘুমের তাড়না ইত্যাদি কারণে এশার নামাজের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়। এ জন্য রাসুল (সা.) একাধিক হাদিসে বিশেষভাবে এ নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
আরো পড়ুনঃ নিউ ইসলামিক গজল | কলরবের নতুন ইসলামী গজল | ৫ টি কলরবের নতুন গজল
মহিলাদের এশার নামাজের নিয়ম
যেহেতু প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ তাই আপনি পুরুষ হন কিংবা মহিলা আপনার অবশ্যই নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানা লাগবে। বর্তমানের সময়ে এই আধুনিকতার যুগের মধ্যে এখনো এমন মহিলা খুঁজে পাওয়া যায় যারা কিনা সঠিকভাবে নামাজ পড়তে জানে না।
যেখানে কিনা এখন প্রায় প্রত্যেক জায়গাতেই ইসলাম পৌঁছে গিয়েছে এবং ইসলাম সম্পর্কে অনেকেই জানেন কিংবা অনেকেই দাওয়াত দিতেছে। আবার অনেকেই যার কারণে গুগলের মধ্যে সার্চ করে থাকে এশার নামাজের নিয়ম মহিলাদের বিশেষ করে যারা মহিলা রয়েছেন।
এখানে আজকের এই আর্টিকেলে আমি উপরে আপনাদের সাথে এশারের নামাজ পড়ার নিয়ম কি রকম সেটা শেয়ার করেছি। সুতরাং আপনি যদি একজন মহিলা হয়ে থাকেন এবং এই প্রশ্ন করে দেখেন তাহলে এখান থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তরটা জেনে নিন।
এখানে বলতে গেলে মহিলাদের এশারের নামাজ এবং পুরুষের এশার নামাজের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য পাওয়া যায় না। তবে পার্থক্যটা ওই জায়গাতে পাওয়া যায় যে জায়গাতে কিনা প্রত্যেক নামাজের মধ্যে পুরুষ এবং মহিলার পার্থক্য রয়েছে।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে এশারের নামাজের মধ্যে পুরুষ-মহিলার মধ্যে পার্থক্য না থাকলেও, প্রত্যেক নামাজের মধ্যে (পুরুষ-মহিলার) যে পার্থক্য রয়েছে সেটা এশারে নামাজের মধ্যেও পাওয়া যায়।
সুতরাং আপনি যদি মহিলা হয়ে থাকেন এবং অন্যান্য নামাজ পুরুষদের থেকে যে পৃথক রয়েছে সেই ভাবে পড়তে জানেন, তাহলে আপনি সেই ভাবে এশার নামাজও পড়তে পারেন। সুতরাং এশারের নামাজের মধ্যে আলাদা কোন পার্থক্য পাওয়া যায় না পুরুষ এবং মহিলার নামাজের মধ্যে।
আরো পড়ুনঃ সেরা ইসলামিক গজল | কলরব ইসলামী গজল
নারী ও পুরুষের নামাজের পার্থক্য
আল্লাহ তায়ালার অনেক কিছু সৃষ্টি এই পৃথিবীতে বিদ্যমান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মানব জাতি। মানবজাতির মধ্যে প্রধানত দুই শ্রেণীর লোক পাওয়া যায় মহিলা এবং পুরুষ। মহিলা এবং পুরুষের শুধু বাহ্যিক পার্থক্য নয় বরং উভয়ের চলাফেরা সাজগোজ প্রায় প্রত্যেক দিকেই অনেক ব্যবধান রয়েছে।
যেহেতু পুরুষ এবং মহিলার অনেক দিক থেকে পার্থক্য পাওয়া যায় তাহলে কি মাসলা মাসেলের দিকে পার্থক্য হবে না এটা কি হয়? সুতরাং পুরুষ এবং মহিলার ইবাদতের মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে অনেক যেমন নারীরা নিজেকে পর্দায় আবরণ রাখবে অপরদিকে পুরুষরা নিজেদের চক্ষু হেফাজত রাখবে।
তাছাড়া পুরুষরা উচ্চস্বরে আযান দিবে এবং নারীরা তাদের কন্ঠ হেফাজত করবে। বলতে গেলে অনেকগুলো পার্থক্য পাওয়া যায় নারী পুরুষের মধ্যে ঠিক তেমনি নামাজের মধ্যেও রয়েছে নারী এবং পুরুষের অনেক পার্থক্য। এখানে আপনাদের সুবিধার্থে নারী-পুরুষের নামাজের পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:-
১/ হাত বাঁধার মধ্যে পার্থক্য:- নারী-পুরুষের নামাজের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটা পার্থক্য হচ্ছে (তাকবীরে তাহরিমা বলে) নারীরা হাত তোলার সময় হাত বুক বরাবর তুলবে। অপরদিকে পুরুষরা তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত তোলার সময় কান বরাবর তুলবে।
হাদিস:- হজরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে হাজির হলাম, তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার সঙ্গে একথাও) বললেন, হে ওয়াইল ইবনে হুজর! যখন তুমি নামাজ শুরু করবে তখন কান বরাবর হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। -আল মুজামুল কাবির, তাবারানি: ২২/২৭২
২/ সিজদার মধ্যে পার্থক্য :- নারীরা যখন সিজদা করবে তখন এক এক অঙ্গ অপর অঙ্গের সঙ্গে মিলিয়ে এবং কোমরের নিচু করে অর্থাৎ সবগুলো জড়োসড়ো করে সিজদা করবে। অপরদিকে পুরুষরা সিজদা করার সময় এক অঙ্গ অপর অঙ্গের থেকে আলাদা রাখবে এবং কোমর উঁচু করে রাখবে।
তাবেয়ি ইয়াযিদ ইবনে আবি হাবিব (রহ.) বলেন, একবার রাসূল (সা.) নামাজরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের বললেন, যখন সিজদা করবে তখন শরীর জমিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেবে। কেননা মহিলারা এক্ষেত্রে পুরুষদের মতো নয়। -কিতাবুল মারাসিল, ইমাম আবু দাউদ: ৮০
৩/ বসার মধ্যে পার্থক্য :- নারীরা যখন নামাজের মধ্যে বসবে তখন পুরুষদের মত বাম পায়ের উপর বসবে না। বরং নারীরা উভয় পা ডানদিকে বের করে দিয়ে সরাসরি মাটি/জায়নামাজ ইত্যাদির উপর বসবে। অপর দিকে পুরুষরা ডান পা মাটি/জায়নামাজ ইত্যাদির বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসবে।
এভাবে নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েত অনুযায়ী অর্থাৎ কোরআন হাদিসের আলোকে নারী-পুরুষের নামাজের মধ্যে মৌলিক কিছু পার্থক্য দেওয়া রয়েছে। এসব নীতিমালার আলোকে নারী-পুরুষের নামাজের মধ্যে আরও কিছু পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন:- মহিলার যখন নামাজে দাঁড়াবে তখন উভয় পা মিলিয়ে রাখবে ফাঁকা রাখবে না, তাকবীরে তাহরিমা বলে হাত বাধার সময় ওড়নার নিচে হাত বাঁধবে তথা ওড়নার বাইরে হাত বাহির করবে না, যখন মহিলারা রুকুতে যাবে তখন হালকা ঝুঁকবে পিঠ টানটান করবে না পুরুষের মত, যখন রুকু-সিজদাতে যাবে তখন হাত পায়ের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে ফাঁকা করবে না।
আরো পড়ুনঃ 80+ ইসলামিক পিকচার | প্রোফাইল পিকচার ইসলামিক পিকচার | ইসলামিক পিকচার মেয়েদের
উপসংহারঃ আজকের এই আর্টিকেলে আমি এশার নামাজ কয় রাকাত,নারী ও পুরুষের নামাজের পার্থক্য ইত্যাদি সহ আরো অনেক কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের অনেক উপকারে এসেছে। ধন্যবাদ।