চুল সোজা করার উপায়:– বর্তমানে কম বেশি আমরা সকলেই চাই নিজেদের চুল সুন্দর এবং সোজা রাখতে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদের সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
আজকে আমি আপনাদেরকে জানাতে চলেছি কিভাবে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে নিজের চুল সোজা রাখবেন সব সময়। তাই আমি আপনাকে অবশ্যই রিকমেন্ট করব আপনি যেন আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়েন।
যদিওবা এখন কার্লি ফ্যাশানের যুগ তারপরেও এখন অনেকেই আছেন যারা কিনা স্ট্রেট চুলকে পছন্দ করে থাকেন। যার কারণে আমাদের মাঝে অনেকেই তাদের চুল রিবন্ডিং করার জন্য হয়তো বিভিন্ন পার্লারের ছোটো চুরি করতেছেন কিংবা অনেক স্ট্রেইটনারের কাছে চলে যাচ্ছেন।
![]() |
চুল সোজা করার উপায় |
ঘণ্টাধ্বনি কুকরা দুলানু বাবরি চুলের স্টাইল মনে হয় আপনার লোকটাকে অনেক বোরিং করে তুলতেছে। তাহলে একটা কথা যদি আমাদের নিজের ঘরে বসেই নিজের বানানো হেয়ার স্টাইল পেয়ে যায়।কোন প্রকার কেমিক্যাল এবং হিট ছাড়াই যদি আমাদের চুলকে সোজা করতে পারি তাহলে কি হতো?
এমন কিছু সহজলভ্য উপাদান যেগুলো কিনা আমাদের প্রতিনিয়ত হাতের কাছেই থাকে! সুতরাং এই হাতের কাছে থাকা উপাদান গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে কিভাবে আমরা আমাদের চুলকে সোজা রাখতে পারি এইসব বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
আরো পড়ুনঃ
- স্বাস্থ্য হওয়ার ঔষধের নাম | মোটা হওয়ার ভিটামিন ট্যাবলেট এর নাম
- কাঁচা ছোলা ও বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি মোটা হয় | ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মাধ্যমে রূপচর্চা।
চুল সোজা করার উপায় | How to straighten hair
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদের সাথে এমন 10 টি চুল সোজা করার উপায় সম্পর্কে বলতে চলেছি যেগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে আপনার মাথার চুলকে সোজা করতে পারবেন।
যে উপাদান গুলো সাধারণত সব সময় আমাদের হাতের কাছেই থাকে। তাহলে আর দেরি কোন বিস্তারিতভাবে এই বিষয়টা আমরা জেনে আসি। তাই অবশ্যই আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করবেন।
(১) চুল সোজা করতে নারিকেল তেল এবং দুধ
তার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম তা জানার খেল দুধের মধ্যে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রিত উপাদান গুলো আপনাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে ফ্রিজের মধ্যে রাখতে হবে। কয়েক ঘন্টা পরে আপনি পাত্রের উপরে ভালো ক্রিমি লেয়ার দেখতে পাবেন। অর্থাৎ আপনাকে এই লিয়ারটা ব্যবহার করে আপনার চুল সোজা করতে হবে (এই লেয়ার টাই দরকার হবে আপনার চুল সোজা করতে)।
সুতরাং আপনি যে লেয়ারটা দেখতে পারবেন সেটা চুলের মধ্যে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এমনকি স্কাল্পের মধ্যেও লাগাবেন। লাগানোর পরে ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত আপনার চুল কি স্টিম করতে হবে এবং সর্বশেষ চুল গুলো ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এভাবেই যদি আপনি নিয়মিত করেন তাহলে ধীরে ধীরে আপনার চুলকে সোজা হতে দেখতে পাবেন আগের চেয়ে অনেক।
(২) চুল সোজা করতে সেলেরি পাতা
তার জন্য আপনাকে সর্ব প্রথম কয়েকটি সেলেরি পাতা ক্রাশ করতে হবে। সেগুলো পানিতে দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ফেলুন। এমনকি আপনি পানিতে হাত ঢুকিয়ে দেওয়ার পরে পাতাগুলো ভালোভাবে কষিয়ে নিন যেন পাতা গুলোর নির্যাস পানিতে মিশে যায়।
তারপরে এই মিশ্রণগুলো অর্থাৎ ফানি এবং সেলেরি পাতার মিশ্রণগুলো একটি বোতলের মধ্যে একদিনের জন্য সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। কেননা আপনি যদি এটা করেন তাহলে পাতার ভিতরে যে চুল সোজা করার উপাদানটা রয়েছে সেটা ভালোভাবে ডেভেলপ হতে শুরু করে।
প্রতিদিন যখন আপনি গোসল করবেন ঠিক গোসল করার ১০-১৫ মিনিট আগে এই মিশ্রণটা আপনার চুলের স্কেল্পের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন তারপর গোসল করার সময় শ্যাম্পু করে ফেলুন। তবে যে সমস্ত আমার পাঠক বন্ধুরা রয়েছেন তাদেরকে আমি রিকমেন্ট করব আপনারা যেন এই পদ্ধতিটির চেয়ে অন্য যে সমস্ত টিপস রয়েছে সেগুলো অবলম্বন করেন।
আরো পড়ুনঃ
- সেরা ইসলামিক গজল | কলরব ইসলামী গজল
- বাংলাদেশের সেরা গজল | কলরব ইসলামী গজল
- অনলাইনেই মিলবে জাতীয় পরিচয় পত্র
(৩) চুল সোজা করতে দুধের পুষ্টি
কমবেশি আমরা সকলেই জানি দুধের মধ্যে মায়েশরাইজার রয়েছে এবং আমরা এটিও জানি যে দুধের এই উপাদানটা চুল সোজা করতে সক্ষম। তার জন্য আপনাকে ফুটানো দুধকে ঠান্ডা করে আধা গ্লাস এবং আদা গ্লাস ঠান্ডা পানি মিশ্রণ করতে হবে।
তারপর আপনাকে এই মিশ্রণগুলো কোন একটা স্প্রে বোতলের মধ্যে ভরতে হবে। তারপর আপনাকে এই মিশ্রণগুলো চুলের মধ্যে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনাকে চুলগুলো শ্যাম্পু দ্বারা ধুয়ে ফেলতে হবে।
(৪) চুল সোজা করতে ক্যাস্টর অয়েল
আপনি কি জানেন ক্যাস্টর অয়েল এর মধ্যে রয়েছে চুল সোজা করার অনেক ভালো ভালো গুনাগুন। এটি আপনার চুলকে বাড়িয়ে তুলতে এবং চুল সোজা করতে সাহায্য করবে অনেকাংশে। ক্যাস্টর অয়েলটা আপনার স্কেল্প এর মধ্যে দিতে হবে এবং কোন একটা চিরুনি নিয়ে ভালোভাবে আচড়াতে হবে।
যখন আপনার চুলকে আঁচড়াবেন তখন হাই হিট ব্লু ট্রাই করুন। কেননা ব্লু ট্রাই করার ফলে আপনার চুল যেন তেল তেল ভাব না লাগে এবং শুষ্ক দেখায়। তারপর আপনাকে কোন একটা বেজা তো এমনি আধাঘন্টা ধরে আপনার চুল বেঁধে রাখতে হবে। যদি এটি করেন তাহলে আপনার চুল অতিরিক্ত ভিত্তিক রক্ষা ভাবে এবং চুলের স্ট্রেটনেস বজায় রাখবে।
(৫) চুল সোজা করতে মধু এবং দুধ
আমরা অনেকে মনে করি মধু এবং দুধের যে কন্ডিশনটা রয়েছে সেটা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী হয়তো আর কোন কাজ করে না। কিন্তু হয়তো আপনি জানেন না চুল সোজা করতে মধু এবং দুধের উপকারিতা রয়েছে অনেক। বলতে গেলে এই কম্বোটা ম্যাজিক এর মত কাজ করবে।
তার জন্য আপনাকে এক গ্লাস দুধের সাথে এক চামচ মধু মিশ্রণ করতে হবে। সাথে কিছু স্ত্রাবেরও মিশ্রণ করে নিন। এই মিশ্রণটা আপনি চুলের মধ্যে দুই থেকে তিন ঘন্টা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন এবং তারপরে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যদি সপ্তাহে ২-৩ দিন করেন তাহলে আপনি নিজেই দেখতে পাবেন আপনার চুলের পরিবর্তন।
আরো পড়ুনঃ
- প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়।
- জিমেইল আইডি কিভাবে খুলবো | How to create a Gmail account | ইমেইল ও জিমেইল এর পার্থক্য
- ইউটিউব ডাউনলোড করব কিভাবে | youtube app download
(৬) চুল সোজা করতে মুলতানি মাটি, ডিম এবং চালের গুড়ার মিশ্রণ
সাধারণত আমরা অনেকেই ফুলারস সম্পর্কে জানি। এতদিন এটা জানতাম ত্বকের ডিপ ক্লিনজিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু এটা চুল সোজা করতেও অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই চুলের যত্ন নিতে আপনি এই পদ্ধতিটা অবলম্বন করতে পারেন।
তার জন্য এক কাপ মুলতানি মাটির সাথে মেশাতে হবে একটি ডিমের সাদা অংশ, দুই চামচ চালের গুড়া এবং পানি। এই মিশ্রণটা ভালোভাবে করিয়ে যেন একদম হালকা দেখায় যাতে করে চুলের সমস্ত অংশেই ছিডিয়ে ছিটে পড়ে।
এই মিশ্রণটা আপনার চুলের মধ্যে আধা ঘন্টা ধরে রাখতে হবে এবং মোটা ধরনের যে চিরুনিগুলো রয়েছে সেগুলো দিয়ে ভালো ভাবে আঁচড়াতে হবে। সপ্তাহে যদি আপনি এরকম দুই থেকে তিনবার করেন তাহলে আপনি নিজেই দেখতে পাবেন আপনার কোঁকড়া চুল কিভাবে সোজা হয়ে যাচ্ছে।
(৭) চুল সোজা করতে হেয়ার রেপিং
চুল সোজা করতে কিংবা চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে এখন বর্তমানে অন্যতম একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে হেয়ার রেফিং। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না এটা কিভাবে কার্যকর। অর্থাৎ অনেকে জানে না এটা কিভাবে কার্যকরীভাবে করতে হয়।
একটা সৌভাগ্যের বিষয় হচ্ছে ইতিমধ্যে হেয়ার রেফিং এর বিষয়ে ইউটিউবের মধ্যে অনেক টিউটোরিয়াল রয়েছে। এই পদ্ধতিটা প্রায় প্রতিটি চুলের ক্ষেত্রে কার্যকর ভাবে কাজ করবে আশা করি।
বিভিন্ন চুলের টাইপের কারণে টেক্সচার এবং দৈর্ঘ্যের জন্য যদিও বা বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে কিন্তু সবগুলোর কার্যকারিতা কিংবা ধরন একই রকম। সুতরাং তার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি লম্বা ববি ফিন (যেটা কিনা লম্বাই ৩ ইঞ্চি হবে এবং এটাকে আবার রুলার ফিনও বলা হয়ে থাকে)। তার সাথে নিতে হবে আপনাকে একটি সাটিন (চুল মোড়ানো) স্ক্যাল্প কিংবা একটি পাগড়ি।
চুল মোড়ানোর জন্য, উপরের অংশটি আলাদা করুন যেখানে সাধারণত আপনি আপনার চুল ভাগ করেন। তারপর একটি সূক্ষ্ম দাঁতওয়ালা চিরুনি দিয়ে আপনার চুলকে সমতল করে আঁচড়াবেন।
তারপর আপনার চুলগুলোকে ধরে টানটান করে আপনার মাথার পিচর অংশে নিয়ে যান যেখানে আমাদের চুলগুলো সাধারণত পড়ে থাকে। তারপর আপনার মাথার পাশে শক্তভাবে ফিন করে ফেলুন। আপনাকে এই পদ্ধতিটি আপনার মাথার চুলের প্রতিটি অংশে অনুসরণ করতে হবে। যখন আপনি রাতে ঘুমাতে যাবেন তখন আপনার চুল সুরক্ষিত রাখার জন্য পাগড়ি দিয়ে বেঁধে রাখুন।
আরো পড়ুনঃ
- চুল দ্রুত লম্বা ও ঘন কালো করার ঘরোয়া উপায়।
- মোটা হওয়ার ভিটামিন ক্যাপসুল । মোটা হওয়ার ঔষধের নাম ।
- চুলকানি দূর করার ৫ টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়।
উপসংহারঃ আজকের এই আর্টিকেলের মূল বিষয় ছিল “চুল সোজা করার উপায়” সুতরাং আপনার যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবদেরকে কিংবা আত্মীয় স্বজনের কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন। তারা যেন আপনার কারণেই এই বিষয়বস্তু জানতে পারে।