প্রতিটি মুসলমানদের জন্য প্রতিবছর দুটি ধর্মীয় উৎসব রয়েছে একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর
অপরটি হচ্ছে ঈদুল আযহা। ঈদ-উল-ফিতর যাওয়ার দুই মাস দশ দিন পরেই ঈদুল আজহা
উদযাপিত হয়ে থাকে।তাই প্রতিবছর যেহেতু শুধুমাত্র একবার ঈদুল আযহা কিংবা ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়া হয়
তাই সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কিভাবে নামাজ পড়তে হবে অর্থাৎ ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম
ভুলে যায়।
![]() |
ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম | ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত |
যার কারণে প্রায় প্রতিবছরই প্রতিটি মুসলমানদের ক্ষেত্রে আবার নতুন করে ঈদুল আযহা
এবং ঈদুল ফিতরের নামাজ শিখতে হয়। তাই আপনিও যদি কিভাবে ঈদুল আযহার নামাজ হয়
পড়তে না জানেন কিংবা ভুলে গেছেন।
তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই লেখা হয়েছে কেননা আজকের এই আর্টিকেলে আমি
ঈদুল আযহার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
তাই আর্টিকেল যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে মনযোগ দিয়ে পড়া শুরু
করেন তাহলে আশা করি কুরবানির নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে যাবে।
তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
আরো পড়ুনঃ
- কোরবানির ঈদ কবে 2022 | ঈদুল আযহা 2022 কত তারিখে
- এসএসসি রেজাল্ট থেকে | এসএসসি রেজাল্ট দেখার নিয়ম
- মালয়েশিয়া কি কি কাজ করা যায় | মালয়েশিয়া ভিসা কবে থেকে শুরু হবে
- সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত | সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ
ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম
এক বছর পরে আমাদের ইসলামের অন্যতম এক উদযাপিত দিন কিংবা এক অন্যতম ঈদের দিন আবার
হাজির হল যেটা কিনা ঈদ-উল-আযহা নামে কিংবা কুরবানীর ঈদ নামে আমরা ছিনে থাকি।
প্রতিটি মুসলমান কিংবা ঈমানদারের জন্য এই দুটি দিন অর্থাৎ ঈদুল আযহা এবং ঈদুল
ফিতরের দিন ঈদ অর্থাৎ খুশির দিন হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই দিনে ঈদের
নামাজ পড়া প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞান সম্পন্ন, পুরুষের জন্য ওয়াজিব।
আমাদের সবচেয়ে বড় কিতাব অর্থাৎ আল-কোরআনে সরাসরি আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ-
অর্থ– অতএব তোমার রবের উদ্দেশেই নামাজ পড়ো এবং নহর করো।’ (সুরা আল কাউছার, আয়াত:
২)
কোরবানির নামাজের নিয়ম
যেহেতু কোরবানি নামাজ এবং ঈদুল আযহা ইত্যাদির নামাজ অন্যান্য সাধারণ অর্থাৎ পাঁচ
ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মতো নয় তাই বিশেষ করে আমাদের কুরবানির নামাজ ইত্যাদি এগুলো
ভুলে যায়। যার কারণে প্রতিবছর আবার নতুন করে শিখতে হয়।
তাই আপনাদের সুবিধার্থে এখানে আমি উল্লেখ করে দিয়েছি কোরবানির নামাজের নিয়ম
স্টেপ বাই স্টেপ আপনাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি। তাই আর দেরি না করে আর্টিকেলটি শুরু
থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়বেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক
# সর্বপ্রথম আপনাকে অন্যান্য ফরয নামাযের মত তাকবীরে তাহরীমা তথা আল্লাহু আকবার
বলে হাত বাধতে হবে।
# তারপর আমরা অন্যান্য নামাজে যে ছানাটা পড়ি সেটা পড়তে হবে। আর আপনি যদি ছানা
না জানি না সে ক্ষেত্রে গুগোল কিংবা ইউটিউব থেকে বা কোন একজন আপনার পার্শ্ববর্তী
বড় আলেম থেকে শিখে নিবেন।
# তারপর অতিরিক্ত তিন তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলবেন। প্রথম দ্বিতীয় তাকবীরে হাত
তুলে ছেড়ে দিবেন এবং তৃতীয় তাকবীরে হাত তুলে আবার বেঁধে ফেলবেন।
# তারপর ইমাম আউযুবিল্লাহ,বিসমিল্লাহ এবং সূরা পড়ে সূরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য
আরেকটি সূরা মিলাবে। তবে অন্যান্য মুক্তাদিরা চুপ থাকবে।
# তারপর অন্যান্য ফরজ নামাজ কিংবা সুন্নত ইত্যাদির মতো রুকু ইত্যাদি করার পর
প্রথম রাকাতে শেষ করবে।
# প্রথম রাকাত উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে শেষ করার পর, দ্বিতীয় রাকাতের জন্য
দাঁড়ানোর পরে সূরা ফাতিহা এবং অন্য আরেকটি সূরা মিলানোর পরে রুকুতে যাওয়ার আগে
তিনটি অতিরিক্ত তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলবে। প্রতিটি তাকবীর বলার পর হাত উঠাবেন
এবং ছেড়ে দিবেন আবার চতুর্থ আরেকটি তাকবীর (সাধারণ রুকুতে যাওয়ার তাকবীর) বলে
রুকুতে চলে যাবেন।
# তারপর অন্যান্য ফরজ নামাজ কিংবা সুন্নত মোটকথা সাধারণ নামাজের মত নামাজ শেষ
করবে।
# যখন উপরে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী ঈদের নামাজ শেষে যাবে তখন ইমাম নামাজ শেষে
মিম্বরে উঠবে এবং দুটি খুতবা দিবে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে খুতবা দেওয়ার
সময় মুক্তাদীদের অর্থাৎ খুতবা শ্রবণকারী ব্যক্তিরা দুনো হাটু ফেলিয়া বসিবে
(নামাজে বসার মত করে)। এবং খুতবা দেওয়ার সময় কোন প্রকার কথা বলা এবং অন্য কোন
কাজে ব্যস্ত থাকা যাবে না।
# এবং সবশেষে সবাই ঈদগাহ থেকে চলে যাবে এটাই হল মূলত কোরবানির ঈদ এর নামাজ পড়ার
নিয়ম।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত
নিয়ত অর্থ হচ্ছে ইচ্ছে পোষণ করা। অর্থাৎ আপনি কোন একটা জিনিস করতেছেন সেটা কি
করতেছেন সেটা নির্ধারণ করাই হচ্ছে নিয়ত। ঠিক তেমনি ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত
থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেক ধরনের নিয়ত এর ধরন একই রকম।
আপনি যখন আযহার নামাজ কিংবা অন্য যে কোন নামাজ পড়বেন তখন অবশ্যই নিয়ত করতে হয়।
নিয়ত না করলে আপনার নামাজ হবে না। কেননা আপনি যদি নামাজ পড়েন এবং কি করতেছেন
সেটা যদি নির্ধারণ না করেন তাহলে সেটা কেমন হবে?
তাহলে চলুন এখন জেনে যাক ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত কিভাবে করবেন। খুব সহজ একটা
নিয়ম নিয়ত করার পদ্ধতি টা। আমাদের মধ্যে অনেকেই অনেক রকম নিয়ত করে থাকেন
অর্থাৎ সহজ একটা বিষয়কে অনেক কঠিন করে ফেলেন। তাই আজকে আমি খুব সহজ ভাষায়
আপনাদের কে নিয়ে জানিয়ে দেবো।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়তঃ মনে মনে এরাদা করবেন আমি আল্লাহ তাআলার জন্য এই ইমামের
পিছনে দুই রাকাত ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করতেছি।
শুধুমাত্র এতোটুকুই করলেই আপনার ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত সম্পন্ন হয়ে যাবে।
তারপরে আপনি আপনার বাকি নামাজ উপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী শেষ করবেন।
আরো পড়ুনঃ
নোকিয়া বাটন মোবাইলের দাম বাংলাদেশ
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত বাংলায়
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা বাংলায় নিয়ত করতে চাই আমার মধ্যে এটাই
সবচেয়ে বেস্ট। কেননা আপনি নিজের বাংলা ভাষায় নিয়ত না করে আরবীতে নিয়ত করতেছেন
ঠিক আছে আপনি কি আরবি সেই নিয়ত এর অর্থ জানেন?
তাহলে আপনি যদি আরবি নিয়ত এর অর্থ না জানেন তাহলে আপনি নিয়ত অর্থ-যে ইচ্ছে পোষণ
সেটা কিভাবে আদায় করতেছেন। অর্থাৎ নিয়ত অর্থ যেহেতু মনের ইচ্ছে পোষণ করা যেটা
কিনা বিশেষ করে নিজের ভাষায় বেশি করা যায়।
তাই আপনি আরবি নিয়ত নিয়ে দৌড়াদৌড়ি না করেই তাড়াহুড়ো না করে নিজের ভাষায়
নিয়ত করতে অভ্যস্ত করে তুলুন। কেননা এক্ষেত্রে আপনি কোন আমলটি করতেছেন সেটা
ইচ্ছে পোষণ করতে পারতেছেন। খুব সহজ একটা বিষয়। যেটাকে কিনা আমরা অনেক কঠিন করে
ফেলেছি নিজেই।
তো আপনি যদি ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত বাংলায় করতে চান সে ক্ষেত্রে আমি উপরে
বর্ণনা করে দিয়েছি কিভাবে আপনি নিজের বাংলা ভাষায় ঈদুল আযহার নিয়ত করবেন। তাই
আপনি বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য আর্টিকেলটি শুরু থেকে পড়ে আসুন।
আরো পড়ুনঃ
দোয়ায়ে কুনুত এর ফজিলত | দোয়ায়ে কুনুত ডাউনলোড পিডিএফ
ঈদের নামাজের ইমামতির নিয়ত
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কিনা ইমামতি করি অর্থাৎ ইমাম তারা কিভাবে ঈদের
নামাজের ইমামতির নিয়ত করবেন সেটা একটু জেনে নেয়া যাক।
অনেকেই মনে করেন যে আমি যেহেতু ইমামতি করতে চাই তাই হয়তো এখন আর নিয়ত করা
আবশ্যক। তবে তেমন কোন কিছু নেই কেননা নিয়ত অর্থ হচ্ছে মনের ইচ্ছে পোষণ করা।
তাই আপনি যদি ইমামতি করেন তাহলে আমি উপরে যে নিয়তের কথা উল্লেখ করেছিলাম সেভাবে
করলে হয়ে যাবে। অর্থাৎ যেটা কিনা আপনি আর্টিকেলটি শুরু থেকে পড়ে আসলে বুঝতে
পারবেন। তবে আপনি যদি ইমামতির নিয়ত করেন তাহলে সেটা আপনার জন্য উত্তম।
কেননা যখন কোন একজন ইমাম নামাজ পড়ানোর জন্য জায়নামাজে যায় তখন সেটা থেকেই বোঝা
যায় যে তার মনের ইচ্ছা। অর্থাৎ সে জায়নামাজে যেহেতু নামাজ পড়ানোর জন্য উঠছে
সেখান থেকেই বোঝা যায় তার ইমামতি করার ইচ্ছে আছে। অর্থাৎ তার নিয়ত আছে সেই
ইমামতি করবে। তবে আপনি যদি ইমামতি করেন এবং ইমামতির নিয়ত করেন সেটা আপনার জন্য
উত্তম।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম ভিডিও
অনেক ঈমানদার মুসলমানরা আছেন যারা কিনা ব্যক্তি কিভাবে দেখতে চান ঈদুল আযহার
নামাজ পড়ার নিয়ম। এটাই সবচেয়ে বেস্ট পদ্ধতি ঈদুল আযহার নামাজ শিখার জন্য। তাই
অনেকেই গুগোল এ ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম ভিডিও লিখে সার্চ করেন।
তো সেসব ঈমানদার ভাইদের কথা চিন্তা করে আমি আর্টিকেলের একদম শেষে এসে আপনাদের
জন্য একটি ভিডিও দিয়ে দিয়েছি। যেখান থেকে আপনারা খুব সহজেই প্র্যাকটিক্যালি
ভাবে ঈদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সেটা দেখে নিতে পারবেন।

উপসংহারঃ আজকের এই আর্টিকেল থেকে যদি আপনার একটু হলেও উপকার আসে তাহলে
আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়স্বজনের কাছে শেয়ার করতে ভুলবেন না। কেননা
হয়তো আপনার একটি শেয়ারের কারণেই ঈদুল আযহার নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেক
অজানা ব্যক্তি জেনে যাবে। তাই আবারও বলছি আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শেয়ার করেন
তাহলে আপনিও ইসলাম প্রচারের অংশীদারি হবেন।
আরো পড়ুনঃ
কিভাবে এসএসসি রেজাল্ট দেখব | সকল বোর্ডের এসএসসি রেজাল্ট দেখার নিয়ম
বিশেষ দ্রব্যষ্টঃ আমি যেহেতু একজন ফেরেশতা নয় বরং আপনাদের মতই একজন
মানুষ। তাই অবশ্যই আমার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সুতরাং দয়া করে আমার এই
আর্টিকেল কিংবা আমার ওয়েবসাইটে কোন প্রকার ভুল চোখে পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাকে
কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন প্লিজ। ধন্যবাদ।